দেড় বছর আগে ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে বিপুল অর্থ, অস্ত্র ও মদসহ গ্রেপ্তার মনির হোসেন ওরফে ‘গোল্ডেন’ মনিরকে অর্থ পাচার মামলায় জামিন দেননি হাইকোর্ট। তবে আগামী তিন মাসের মধ্যে মামলাটির তদন্তকাজ শেষ করে অভিযোগ পত্র দিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মনিরের আইনজীবী জামিন আবেদনটি প্রত্যাহার করে নিতে চাইলে জামিন প্রশ্নে রুল খারিজ করে আদেশ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদালতে গোল্ডেন মনিরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম। রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
আইন কর্মকর্তা আমিন উদ্দিন মানিক কালের কণ্ঠকে বলেন, “এ মামলায় জামিন চাইলে গত বছর ১৫ ডিসেম্বর আদালত তার জামিন প্রশ্নে রুল দিয়েছিলেন। কেন তাকে জামিন দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছিল রুলে। এ রুলটি তারা চালাবে না জানালে খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। ”
তার আগে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছাদেক আলী তদন্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দেন আদালতে। ওই প্রতিবেদনে তিনি বলেন, ‘তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এ মামলা ছাড়াও ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় এ আসামির বিরুদ্ধে আরও পাঁচটি মামলা রয়েছে। এ আসামি অত্যন্ত ধুরন্ধর প্রকৃতির লোক। এ মামলায় আদালতে সে জবানবন্দি দিতে রাজি না। আসামির কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে তাকে ফের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হতে পারে। ’
মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ আইনে গত বছর ১১ মে গোল্ডেন মনিরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিআইডির পরিদর্শক মোহাম্মদ ইব্রাহিম। মনির ছাড়া এ মামলায় আসামি করা হয়- মনিরের সহযোগী আবদুল হামিদ (৬০), মনিরের স্ত্রী রওশন আক্তার, ছেলে রাফি হোসেন (২৪), বোন নাসিমা আক্তার, নাসিমার স্বামী হাসান আলী খান (৫২), মনিরের আরেক ভগ্নিপতি নাহিদ হোসেনকে (৪৭)।
এছাড়াও মনিরকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার অভিযোগে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রিয়াজ উদ্দিন (৬৩), রিয়াজ উদ্দিনের ভাই হায়দার আলী (৫৬) এবং মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিককেও (৫২) আসামি করা হয়।
মামলার এজহারে বলা হয়, অপরাধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত অর্থে মনির হোসেন স্ত্রী, ছেলে এবং তার নিজের নামে সরকারি ২০টিসহ ৩০টি প্লট, ১৫টি ভবন, একটি আবাসন প্রতিষ্ঠান এবং দুটি গাড়ির শো রুম করেছেন। ব্যাংকে তার নামে রয়েছে ৭৯১ কোটি পাঁচ লাখ ৯৬ হাজারের বেশি টাকা।
২০২০ সালের ২১ নভেম্বর মেরুল বাড্ডার বাড়ি থেকে মনিরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। সেখান থেকে জব্দ করা হয় নগদ ১ কোটি ৯ লাখ টাকা, চার লিটার মদ, ৮ কেজি স্বর্ণ, একটি বিদেশি পিস্তল ও কয়েক রাউন্ড গুলি।
র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘সোনা চোরাচালানে’ জড়িত থাকার কারণে তাকে সবাই ‘গোল্ডেন মনির’ নামে চেনে। সোনা চোরাচালান দিয়ে সম্পদ গড়া শুরু করলেও পরে জমির ব্যবসায় জড়িয়ে ‘মাফিয়া’ হয়ে উঠেছিলেন মনির। তার গাড়ির ব্যবসাও রয়েছে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট