1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:০২ অপরাহ্ন

পরে কথা হবে বন্ধু এখন আমি কাঠগড়ায়

এড. বিলকিস ঝরণা
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২
আমার জবানবন্দি দেবো বলে ভেবে যাচ্ছি। কোন সত্যটা কিভাবে পরিবেশন করবো- ভেবে যাচ্ছি। কিভাবে কোন রং মেখে দিলে বিচারক মহোদয় আমলে নিবেন – আমি ভেবে যাচ্ছি।
আমি ভেবে যাচ্ছি আমার বিছানায় নিয়মিত ফাইলপত্রে ঘুনপোকার আচরণ – ঘুনপোকার গুরো করা দৃশ্যমান দানা – রাতভর ঘুমের ব্যঘাত-
কিন্তু আমার না দেখা ঘুণপোকার অস্তিত্ব আমার ক্ষইয়ে ফেলা দূর্বল আসবাব প্রাকৃতিক -জৈবিক -স্বাভাবিক জীবনের ধারায় আমার বিপর্যস্ত দুধ চায়ের গন্ধ পাশের সুরম্য অট্টালিকার সবুজ বেলকনিতে প্রতিদিনের সকাল – সাদা মুড়ি। সৈনিকের তাবুর ফোঁকর গলে বেড়িয়ে পরে পারদের পৃথিবী। খোলা নীল আকাশে শব্দের ছাপানো ছিটেফোঁটা কবিতা রং। কে ছড়িয়ে দিয়েছিলো আমি জানিনি। ট্রেনের ভয়াবহ গতি। আর কিছু মৃত্যুর বাড়তি খসরা।
ঝেড়ে ফেলা কমলা ধুলোবালি ।সাইকেল রাইডার ভুল পথে ফেলে আসে খেলার মাঠ আর পরিপাটি করিডোর।আত্মহত্যার উপযুক্ত বিছানা। আমার ছায়াগুলো হামেশাই পাশাপাশি ছাই রঙে পঙ্গু মানুষের ছবি নিয়ে তামাশায় মাতে।উচ্ছিষ্ট খাবার খুঁজেছিলো দুধ সাদা পোষা বিড়াল ছানা।যখনও রাতের মধ্য প্রহরে নাটকের মহরা চলছিলো।
শাড়ির নীল আঁচলে যে ছবি আঁকা। সে হরিণ শাবক হলুদ বনে দুপায়ে ভর দিয়ে উঁচু ডালের কঁচি পাতার গন্ধ নেয়। ল্যামপোস্টের নিচে তিন কিশোর ঝিমায়।সন্ধ্যাবর্তে রোজ তাদের পরোটা ভাজি। আধপোড়া পেট।জখমের রাত্রি শেষে অসুন্দর ভোর।শুভ সকাল বলেনি কেও কোনদিন তাকে। বনলতা মাতা কোথায় হারিয়ে গেছে —
শ্যাঁতশেতে ভূমিতে প্রাঞ্জল শ্যাওলার উদগীরণ। স্বস্তির প্রাণের অপমৃত্যু ঘুরে ফিরে আসে প্রতিবার। লাগাতার বিপ্লবের সেতুর ক্ষয়ে যেতে দেখে যাই।
আমি তবু ভাবছি কোটি আলোকবর্ষ সময় বয়ে যায়।
কোথায় প্রথম শুরু করেছিলাম মনে পরে না। নারীর শরীরে আরও একটা মানুষের ভ্রুন ক্রমান্বয়ে বিভাজনের সময়ে আমার মা শাড়ি পাল্টায়।ক্যামেরায় বন্দী হয় আরও দুজন জীবিত যুদ্ধা।
তারপর ভোর আসে প্রতিদিন। আমরা হেরে যাই – জয়ী হই আবর্তে —
ক্ষণে ক্ষণে। আরও অনেক ক্ষুধাতুর গল্প থেকে গেছে দরজার ওপাশে। গরম ভাতে জমে গেছে এলকোহল।
রাজপথে একদল কুকুর।কেউ হয়তো জলাতংকে আক্রান্ত।আমি কুকুরদের মুখয়বে হাসিকান্না টের পাইনি। একদিন সে মরে পড়েছিলো রাস্তার মাঝখানে।কুকুরের দেহ দাফনের নিয়ম নেই।ভাগাড়ে ফেরার আগে আরও কতোবার পিষ্ট হতে হতে রাজপথে মিশে যায় অবশেষ। আমাকে বহমান রিক্সার চাকা আরও একবার দলে যায় মৃত পা।
আমি মানুষের ব্যথা পাই।অভিশাপ দেই মানুষের মতো।
যে শিশুটি ধনুকের মতো বেঁকে যাচ্ছিলো –মুখে ভয়ানক লালা।তাকে কামড়ে দিয়েছিলো অন্য কোনও জলাতংকিত পদবি প্রাণী। রাজপথের মৃত কুকুরটি কখনও জলাতংকের জীবানু বয়ে বেড়ায়নি।
আমি কি করে এই সত্যটা মহোদয়কে বিশ্বাস করাবো — ভেবে যাচ্ছি —
গাঙ মরে। পাললিক সীমানায় সন্ধ্যা নামে। আমি সূর্যকে পিছনে ফেলে চলি মৃত রাক্ষসের পানে।বাসের হাতল আঁকড়ে অসংখ্য প্রেতাত্মার হাত। দরজা গলে ভেতরে ঢুকে আরও এক নিস্তরঙ্গ প্রেতাত্মা। অন্ধকারে শালীন বক্ষেও অসংখ্য প্রেতাত্মার এক কোটি খোলা হাত নারীর শরীর ছুয়ে দেয়ার উন্মত্ততায় মাতে।
আমি শুধু মাত্র হতবিহ্বলই হতে পেরেছিলাম।
বাউল গান মুখস্থ করেছিলাম শৈত প্রবাহের এক নিশীথে।
খেজুরপাতার রস খেয়ে প্রশাখায় বিস্তার বেড়েছিল পরজীবি স্বর্ণলতার। মহামারি –প্লাবনে অক্ষত লাল গালিচা আর ফরিং এর সঙ্গম যুদ্ধ। ত্রান তৎপরতা গেড়ুয়া ভবনে।
নবীন দিনেশের ফুসফুসে খেলা করে কলকের আগুন।
হাওয়ায় ভাসে বারবিকিউ পুড়ানোর উটকট ধোঁয়ায় মোহনিয় মশলার ঘ্রাণ। কর্মরত কিছু ক্ষীনকায় প্রাণ।
আমার মহতী রিলেটিভ পরিচয় পর্ব সমাপ্তি করে খাবারের স্বাদ গ্রহনে মত্ত। পাশের আরও অসংখ্য বহুতলের জানালায় সার্টার আটা ম্যাক্সিমাম। শীতাতপের কোমল আরামে কিশোর মেধাবী টিউটরের পাঠ নেয়।
শিশুর চোখে মহারাজ্যের গল্প খোলা বারান্দার পানে বিস্তৃত —
ক্রমান্বয়ে পাশে আকাশ হীন –চাঁদ হীন –বৃক্ষ -তরুলতা হীন–নদী
এই মাঠ তারে চিনে নাই।
মহাসড়কের ধার ঘেঁষে কিছু কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় গাড়িগুলো পার্ক করা। সংরক্ষিত।
দু-তিনটে কুকুর ক্লান্ত। ঘুমায়।
ট্রায়ালের চাকা ঘুরে।
ঠিক- ঠাক সেঁটে যায় মার্সিডিস।
কিছু বিশুদ্ধ গদ্যের ভুলভাল আচরণে শহরে ক্ষেপণাস্ত্রের জন্ম হয়।
বিপদের সীমান্তে পৌঁছে থাকে মনিহারী দোকানপাঠ-শিক্ষালয়-পার্ক–লেক আর সুইমিং পুল।
আদালত পাড়ায় ভীড় বাড়ছে। ঠাসাঠাসি ভীর।
বিনোদন শহরে ফুটপাতে ঘুমের শিশু।
পাশে শুকনো থালায় কাগজ আর ধাতব মুদ্রা।
বাগান বিলাসের ফাঁকে পাখিদেরও ঘরবাড়ি। রাত্রি যাপনের।
নাগরিক সুবিধা নিবো বলে আমি এই নগর গড়েছিলাম। জন্ম নিবন্ধন। পাকাপোক্ত ভোটার আইডি।
হাহা
আমার ছোট মুন্নী একদিন কেঁদে ফেলেছিলো। ঘুরতে যাবো।ভোটার আইডি খুঁজে পাচ্ছিলো না। মিষ্টি মুন্নী দেখতে একটু গোল, চ্যাপ্টা চেহারা। ওর ধারণা ওকে যদি রোহিঙ্গা ভেবে পুলিশ ধরে।
অথচ এই মাটি আমার। এই মাটিই আমি প্রথম ছুঁয়ে চিৎকার করেছিলাম আনন্দে।
এই মাটিতে পোঁতা আছে আমার নাড়ী। আমার মা –তারও মা —
আরও কতো পূর্ব নারী —।
সিম কার্ড নিবন্ধন।
ভোটার আইডি। জমির খতিয়ান। মালিকানা।
মূলতঃ আমি ভূমিহীন। আমার কোনও দেশ নেই। আমার কোনও
আমি নেই
এসবের ভীড়ে
আমি তবু নদী খুঁজি। নদী।
আর একটাও বটবৃক্ষ —
অবকাশ নয়। বাস্তুতন্ত্র। চক্র। ধারাবাহিকতা। গতি।
মহামান্য আদালতে বয়ান দিবো ভাবছিলাম।
কিন্তু আমি অপরাধ শব্দের প্রকৃতি ভুলে গেছি।অপরাধীর প্রকৃতি ভুলে গেছি।
সুত্র। ঘটি।বাটি। আর নিয়ামক।
চুল চেরা বিশ্লেষণ—
কে বিচারক — আদালত — কে অপরাধী —
কে ক্ষুধার্ত নয়?
কে নির্বানের জন্য ধ্যানে বসে পর্বত গুহায়
কাজীপাড়ায় জুমার নামাজ।মানুষের কোলাহল। বৈতরণী পার হতে হাজীপাড়ায় সযতনে কাফনে মোড়ে বিকল চেতনা–

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews