চলছে এইচএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষার হল পর্যন্ত পৌঁছাতে আমার সাথী ছিল শীলা। সে ছিল বিবাহিত। আমাদের সেন্টার ছিল একদম বাসার কাছেই। তাই যাওয়া আসার পথে হতো টুকিটাকি কথা। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময় তখন, তাই একটু রোমান্টিকতার ছোঁয়া বেশি ছিল মনে। যেহেতু শীলা ছিল বিবাহিত তাই তার থেকে বৈবাহিক জীবনের কথাগুলো একটু অতি উৎসাহিত হয়ে বেশি শুনতাম। কিন্তু কেমন জানি আমার লাগতো সে বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে কেমন বিতৃষ্ণার কথা বলতো।বাসাটা তার ছিল আমার বাসার কাছেই। তাই বন্ধ থাকলে আমার বাসায় আসতো। আর আমি তাকে তার বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে বলার জন্য পীড়া দিতাম। সে অনেক সময় বিরক্ত হয়ে বলতো, মেয়ে তুই একেবারে পাগল,না না বড্ড পাগলি। আমি হাসতাম আর বলতাম ধুর বলনা অভিজ্ঞতার জন্য না হয় একটু পাগলেই হলাম।
শীলাঃ শুন পাগলি বিবাহ হয় নাই ভালোই আছিস।
কথকঃ যাহ! এ আবার কেমন কথা, আমিতো পরীক্ষার পর বিয়ে করবো তার জন্য মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছি। আশাকরি পরিবার আমার ভাবসাবখান ঠিক মতো বুঝে নিয়েছে। তাই অভিভাবক মহল ঘটকের দরজায় কড়া নাড়লো বুঝি। শীলাতো আমার কথা শুনে রীতিমতন অস্থির হয়ে গেল। বলল..
শীলাঃ বলিস কি মাইরি, তুইতো দিব্বি পাগলরে, একেবারে উন্মাদিনী! সে এবার আমাকে বুঝাতে লাগলো বোন আমার, বিয়ে বিয়ে করে পাগল হইসনা একটুতো পড়াশুনা কর।
কথকঃ ধুর পড়াশোনা! হায়রে! ভালো লাগেনা। বলনা বান্ধবী তোর বরের কথা সে তোকে কেমন ভালোবাসে? তারপর সে মাকে ডাক দিতো বলতো খালাম্মা আপনার মেয়ে গেছে একেবারে রসাতলে। এইচএসসি এবার চুলোয় উঠলো বলে, মা তখন তেড়ে এসে বলতো, এই মুখ পুড়ি বান্দরনি শশুড় শাশুড়ীর ঠেঙানি এখনো দেখিসনি তাই এত জামাই বাড়ি যাওয়ার ভাব। মা আবার একটু বেশিই ঠেঙানি খেতো তার জামাই পয়সাওয়ালা ছিল বলে। আমার দেখা মতে তাই তার অভিজ্ঞতা একটু বেশিই। তখনই শীলা বলে উঠতো খালাম্মা ওরে একটু বুঝান। কে শুনে কার কথা। ভুতের মুখে আবার,’রাম নাম’। আমাদের পরীক্ষার মাঝে একবার কি গণ্ডগোলে যেন পরীক্ষা স্থগিত করলো। আমি শীলাকে এবার পেলাম।বললাম ,
কথকঃ কাহিনী কিরে তোর! সংসার জীবনের কথা শুনলে এভাবে বাঘিনীর মতো ফোঁস ফোঁস করিস কেন বলতেই হবে তোকে আজ। সে হঠাৎ উদাসীন হয়ে গেল বলল,শুনবি আমার কথা। বললাম কেন নয়। (চলবে)