আসন্ন রমজান মাস ঘিরে পাম তেল রপ্তানি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করবে বিশ্বের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া। আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা না এলেও সে দেশের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট মন্ত্রী লুহুত পান্ডজাইতান তাঁর অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রামে এই ঘোষণা দেন। মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স গত মঙ্গলবার এ খবর প্রকাশ করেছে। এর প্রভাবে দেশের পাইকারি বাজারে পাম তেলের দাম বাড়বে বলে গুজব ছড়ায়। কিন্তু আদতে সেটি হয়নি।
খাতুনগঞ্জের পাম তেলের পাইকারি ব্যবসায়ী এ এম এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মাহমুদুল আলম লিটন বলেন, ‘বিশ্ববাজারে দাম কমতে থাকায় অন্তত ছয় মাস ধরে পাইকারি বাজারে পাম তেল বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দরেরও কমে। সেই ধারাবাহিকতা এখনো অব্যাহত আছে। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি বন্ধ করবে বলে শোনা যায়, কিন্তু এর প্রভাব দেশের বাজারে পড়েনি।’
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে সয়াবিন, পাম, সরিষা ও রাইস ব্রান তেল মিলিয়ে দেশে প্রায় ২০ লাখ টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে। চাহিদার বেশির ভাগ অর্থাৎ ১৩ লাখ টনই পাম তেল এবং পাঁচ লাখ টন সয়াবিন তেল। বাকিটা সরিষা, রাইস ব্রানসহ অন্য তেল।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে অপরিশোধিত পাম তেল আমদানি হয়েছে মাত্র ১২ হাজার টন। অথচ ২০২১ সালের একই সময়ে আমদানি হয়েছিল প্রায় এক লাখ ৪৫ হাজার টন। ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর এই ছয় মাসে পরিশোধিত পাম তেল আমদানি হয়েছে ৯ লাখ ৫২ হাজার টন। অথচ ২০২১ সালের একই সময়ে আমদানি হয়েছিল তিন লাখ ৯২ হাজার টন। আমদানি বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণ ১৪৩ শতাংশ। এই চিত্র থেকেই ব্যাপক আকারে পরিশোধিত পাম তেল আমদানির প্রমাণ মেলে। শুধু তা-ই নয়, ২০২২ সালের অক্টোবরে এক লাখ ২২ হাজার টন, নভেম্বরে ৮২ হাজার টন, ডিসেম্বরে ঋণপত্র খোলা হয়েছে সাড়ে ৫৪ হাজার টন। তার পরও কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রামের প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ব্যবসায়ীদের যদি মনে হয় দাম বাড়াবেন তাহলে এত কিছুর ধার ধারেন না। আমদানি বেশি হলো নাকি বুকিং দর কমল, সেটি বিবেচনায় তাঁরা আনেন না। একটা অজুহাত দাঁড় করিয়েই দাম বাড়ান। তাঁদের ঠেকাতে বাজারে সঠিক এবং নিয়মিত তদারকির কোনো বিকল্প নেই। এতে কিছুটা হলেও ভোক্তারা স্বস্তি পাবে।’