জলসিড়ি ওয়ার্ডে থাকা অবস্থায় আমার কোর্ট স্লিপ এলো।আমাকে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টএ উঠানো হবে। তারপর কোর্টএ উঠানো হলো। উকিল ডাক্তারের সমস্ত সার্টিফিকেট কোর্ট এ শো করলেন।আমার জামিন চাইলেন। মেজিস্ট্রেট স্পষ্ট ভাষায় জামিন নাকচ করে দিলেন।বললেন, পূজামণ্ডপে হামলার মামলা।এই মামলায় আমি জামিন দিতে পারবো না।কিন্তু আমার মনে তখন প্রশ্ন জেগে বসলো,মণ্ডপে কখন হামলা করলাম?কি অদ্ভুত মিথ্যাচার।এই হলো আমাদের বিচার ব্যবস্থা।এখানে সত্য মিথ্যা হয় আর মিথ্যা সত্য হয়ে যায়।মিথ্যাকে সত্য প্রমাণের জন্য কতই না আপ্রাণ চেষ্টা।সেই মিথ্যাচারের বেড়াজালে আটকে পড়েছি আমি। যাই হোক ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব জামিন দিলেন না।
আমাকে আবার পাঠিয়ে দেয়া হলো কেরানীগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে।রাখা হলো জলসিড়ি ওয়ার্ডে।প্রায় এক মাস জলসিড়ি ওয়ার্ডে পাগলদের সাথে কাটিয়ে দিলাম। এক মাস পর ইনচার্জ ডেকে বললেন তুমি তোমার আগের ওয়ার্ড যমুনা ৬/১এ চলে যাও।আমি সব ব্যবস্থা করে রেখেছি।আমি পুনরায় চলে গেলাম যমুনা ওয়ার্ডে।সেখানে গিয়ে আবারও ইমামতি করা শুরু করলাম।এইভাবে বেশ কয়েকদিন কেটে গেলো।আরো একমাস কেটে যাবার পর কোর্ট স্লিপ এলো।আমার নামে পল্টন থানায় একই ধারা অনুযায়ী আরেকটি মামলা হয়েছে।তার হাজিরা দিতে হবে।প্রায় প্রতি মাসেই কোর্ট হাজিরা পড়া শুরু করলো। কোর্ট এ হাজিরার প্রথম প্রথম কোর্ট এ তুললেও পরবর্তী ধার্য কোর্ট এর দিন শুধু গারদ থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে আশা শুরু করলো।এভাবে আরো একমাস কেটে গেলো।একমাস পর আবারো কোর্ট স্লিপ এলো।আমার নামে রমনা থানায় আরেকটি মামলা করেছে পুলিশ।গায়েবী মামলা।চকবাজার থানার পুলিশ আমাকে এরেস্ট করেছে না হয় মানলাম।কিন্তু রমনা ও পল্টন থানার মামলা কি কারণে করলো এ বিষয়টা মোটেও আমার মাথায় ঢুকলো না।যেখানে রমনা ও পল্টন থানার ধারে কাছেও আমি যাইনি সেখানে কি করে পুলিশ বাদী হয়ে এরকম মামলা দেয় সেটা কোন ভাবেই মাথায় ঢুকাতে পারলাম না।তার ওপর মেজিস্ট্রেট দিচ্ছে না জামিন। খুবই অদ্ভুত আমাদের বিচার ব্যবস্থা।পৃথিবীর খুব উন্নত ব্যবস্থা আমাদের।ভেতরে রাজনৈতিক মামলায় বন্দি কিছু আসামির কাছে জানতে পারলাম যে রাজনৈতিক মামলায় আসছেন।এই রকম পেন্ডিং মামলা খাবেন। দোষ করেন বা না করেন। গাঁজার মামলা নিয়ে আসা আসামীরা জেল খাটে সর্বোচ্চ একমাস। কিন্তু রাজনৈতিক মামলার আসামিরা জেল খাটে মাসের পর মাস।তারাই বর্তমান সময়ে সব চেয়ে বড় অপরাধী। (চলবে)