1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন

অরূপ গোস্বামীর ধারাবাহিক ভ্রমণ কাহিনীঃ সিমলা ভ্রমণ শেষ পর্ব

অরূপ গোস্বামী
  • প্রকাশিত: শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৩
ঠিক তখনই সনু একটা ভালো খবর দিল।ওর গাড়িতে মোবাইল চার্জের ব্যবস্থা আছে এবং আশার কথা সেই চার্জারে আমার মোবাইল চার্জ নিতে মোবাইল জীবন ফিরে পেল। তখন সনু পাহাড়ি পথে যেন বিমান চালাতে শুরু করলো। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথে গতি না কমিয়ে বাঁক ঘুরতে শুরু করলো। আমি জীবনে অনেক ভ্রমণ করেছি। কিন্তু এমন কষ্ট আর কখনো পাইনি।
অবশেষে রাত নটার দিকে আমাদের হোটেলে এসে পৌঁছাতে পারলাম। সেখানে আসার পর হোটেল দেখে মনে কিছুটা প্রশান্তি আসে। রুমে গিয়ে বাক্স-পেটরা রেখে হাতমুখ ধুয়ে খেয়ে নিলাম। খাবার মোটামুটি ভালো ছিল। রুমে এসে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভাগ্নেদের ঘটনা জানালাম।পরদিন আর সনুর গাড়িতে যাবার সাহস পেলাম না।আগামীকাল কী হবে জানি না।কারণ ভাগ্নেরা সেই গাড়িতে যেতে নিষেধ করলো,এছাড়া নিজেরাও সাহস করতে পারছিলাম না।কিন্তু সকালেই সবকিছু পরিবর্তন হয়ে গেল। জয় ফোন করে জানালো, তেজবীর ড্রাইভার সনুকে অনেক শাসন করেছে। বলেছে আর ওরকম করলে ওকে
কঠিন শাস্তি দিবে।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি,সনু গাড়ি নিয়ে হোটেলের
সামনে প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কিছুক্ষণের মধ্যেই সে ফোন করে ক্ষমা চায় এবং ঘুরতে যাবার আহবান জানায়।আমরা দেখলাম সে যখন নিজের আচরণ বুঝতে পেরেছে এবং অনুতপ্ত, তখন তার গাড়িতেই যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।
সকালের খাবার খেয়ে ন’টার দিকে হোটেল থেকে রওয়ানা দিলাম সোজা কুফরির উদ্দেশ্যে।কুফরি সিমলার উপরের দিকে। সেখান থেকে ঘোড়ায় করে যেতে হয় আরও উপরে। কুফরি শব্দটা কুফর থেকে এসেছে। যার স্থানীয় অর্থ লেক। কিন্তু এখানে আমরা কোন লেক দেখতে পাইনি।
ঘোড়ার পিঠে উঠে দীর্ঘ কর্দমাক্ত, পাথুরে ও পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৮০০ মিটার উঁচুতে মহাসু চূড়ায় উঠি।এটাই ছিল আমাদের জন্য অনেক বড় এডভেঞ্চার। জীবনে সমতলেও কোনদিন ঘোড়ায় চড়া হয়নি। সেখানে পাহাড়ি অনেক বিপদসঙ্কুল পথে ঘোড়ায় উঠেছি।শয়ে শয়ে ঘোড়া পিঠে সওয়ারী নিয়ে উঠছে, নামছে। ওঠার চেয়ে নামা অনেক কঠিনঅভিজ্ঞতা।
মহাসু থেকে কেদারনাথ ও বদ্রিনাথ পর্বতমালা খালিচোখেই দেখা যায়।ভালোভাবে দেখতে দূরবীনের ব্যবস্থা আছে। কিছু রুপি দিয়ে সহজেই দূরের পাহাড় একদম স্পষ্ট দেখা যায়।
তবে এখানকার সবুজ প্রকৃতি আমাদের মন বেশি কেড়েছিল। কুফরি নামকরণের অর্থ না পেলেও গ্রীন ভ্যালী নামের সার্থকতা বোঝা যায়। এখান থেকে চাইলে কিছু রাইডে চড়ার ব্যবস্থা আছে। ট্রেকিং করা যায়।যাদের শারীরিক সামর্থ্য আছে, তারা এখানে বিভিন্ন রকমের এডভেঞ্চার করতে পারেন। আমরা কাছের আপেল বাগান এবং পাহাড়ি গ্রাম দেখেই ফিরে আসি।
সন্ধ্যার কিছু আগে হোটেল কক্ষে ফিরে বিশ্রামে যাই।আসলে এই ভ্রমণ ছিল একইসাথে অনেক মজার ও কষ্টকর।শরীর আর সইতে পারছিল না।তবে ঘরে বসে পড়ন্ত বিকেলের মিষ্টি রোদ খুব উপভোগ্য ছিল। সিমলার যেটা আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে সেটা এখানকার আবহাওয়া এবং সবুজ প্রকৃতি। সবুজ গাছপালা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। আর আবহাওয়া ছিল চমৎকার। তাপমাত্রা ৫ থেকে ১৫ ডিগ্রির মধ্যে ছিল। কিন্তু তেমন শীত অনুভূত হয়নি, বরং অনেক আরামদায়ক মনে হয়েছে। সেজন্যেই বোধকরি লোকজন স্বাস্থ্যোদ্ধার করতে হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলায় যান।
সিমলার হোটেল এবং আমাদের রুমটা অনেক ভালো ছিল। রুমে শুয়ে বিস্তীর্ণ সবুজ উপত্যকা দেখা যেতো। এছাড়া প্রাকৃতিক আলোর কমতি ছিল না,দিনের বেলা সবসময় প্রাকৃতিক আলো পাওয়া যায় ।হোটেলের সার্ভিস ছিল অনেক ভালো। কোন একটা প্রয়োজন জানালে সাথে সাথে তা প্রতিপালনের চেষ্টা ছিল। যাঅনেক হোটেলেই পাওয়া যায় না। এটার মূল কারণ এ হোটেলের ম্যানেজার অত্যন্ত ভদ্রলোক। খাবার সময় প্রতিটি অতিথির কাছে গিয়ে তিনি সুবিধা অসুবিধার খোঁজ নিয়েছেন। আমার পরিচয় জেনে তিনি আমাকে প্রাপ্য সম্মান দেখিয়েছেন। আসার সময় আমাদের ফোটো তুলে দিয়েছেন। শিমলায় আর কখনো যাওয়া হবে
কীনা জানি না, গেলে এই হোটেলে এবং রুমে আর একবার থাকতে চাই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews