1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:২২ পূর্বাহ্ন

কেন ধর্মান্ধরা দুর্নীতিবাজ?

মজিব রহমান
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪
অনেকেই অবাক হন, কেন দুর্নীতিবাজরা এতো ধর্মান্ধ হন? উল্টো করেও বলা যায় যে, কেন ধর্মান্ধরা দুর্নীতিবাজ হয়? এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই বরং এমনটা না হলেই অবাক হতাম। যেমন কোরানে ১৬টি স্থানে বলা আছে, ধর্মের বিনিময় গ্রহণ করলে নিশ্চিত দোজখে যেতে হবে। এরপরও তারা জেনে শুনে এবং বুঝে বিনিময় গ্রহণ করেন এবং এ নিয়ে প্রতিযোগিতা করেন। আমার এক সময়ের একজন বস ছিলেন মারাত্মক ধর্মান্ধ। তিনি অফিসে জহুর এবং আসর নামাজ পড়ানোর জন্য একজন ইমামও নিয়োগ দিলেন। সেই ইমামের পীর ভিন্ন শুনেই তাকে বদলে ফেললেন। প্রথম দিন তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা দিলেন যে, আজ থেকে এ অঞ্চলে দুর্নীতি বন্ধ! আমি বিস্মিত হলেও খুশি হলাম। পরদিনই টের পেলাম তিনি ভয়ানক দুর্নীতিবাজ এবং একইসাথে ভয়ঙ্কর নষ্ট এবং ইতর শ্রেণির মানুষ। টাকার জন্য তিনি সব করতে পারেন। অনর্গল মিথ্যা বলতে পারেন। শেষ পর্যন্ত অংকে মিলে যায়।
বেনজীর থেকে সৈয়দ আবেদ আলী পর্যন্ত ভয়ানক সব দুর্নীতিবাজরাই ধর্মান্ধ। আমাদের মনে আছে সেই স্বাস্থ্যের গাড়িচালক আব্দুল মালেকের কথাও। তারা সকলেই খুব পরহেজগার পরায়ণ মানুষ। ধর্মের জন্য অনেক কিছুই করেছেন। এরপরেও হয়েছেন শতকোটি টাকার মালিক। তিতাসের কর্মচারী মোঃ জয়নায় আবেদীন বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। জামালপুরের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ছানাউল ইসলাম, রাজউকের অফিস সহকারী আনোয়ার এবং এমএ বায়েজিদ খান, মংলা বন্দরের দুর্নীতিবাজ কর্মচারী তাহের, গণপূর্ত ঢাকা মেট্টো জোনের স্টাফ অফিসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার ইবনে সাঈখ, শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী মো. রেজাউল করিম, রুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সেলিম হোসেন, পদ্মাসেতুর শীর্ষ দালাল নাসির কাজী, জাতীয় গৃহায়ন সেগুন বাগিচা অফিসের পিয়ন শাহাদাত ইত্যাদি হাজার হাজার নমুনা পাবেন।
আমাদের শ্রীনগরের একটি মাদ্রাসার সুপার ২০০জন শিক্ষার্থীর এসএসসি সমমানের দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়ার জন্য ৫০০০/- করে টাকা নিয়ে আত্মগোপন করেন। পরীক্ষার্থীরা অধিকাংশই বিভিন্ন অঞ্চলের। ওই শিক্ষকের বাড়ি স্বরূপকাঠী বা নেছারাবাদ। কিন্তু কেউ মামলা করে দেয়াতে তিনি গ্রেফতার হয়ে জেল খাটেন। জামিনে এসে আমাকে বললেন, ‘দেখলেন আল্লার কাম! কেউ আমাকে আটকিয়ে রাখতে পারলো?’ কেউ বলবেন এগুলো চুনোপুটি! এদের নিয়ে বলে কি হবে? কয়েক বছর আগে তাবলিগ জামাতের ভারতীয় প্রধান মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির মামলা দায়ের করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এ প্রসঙ্গে ইডির এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, মাওলানা সাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ও ১২০ বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারায় মামলা দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। আমরা আর্থিক দিকটি তদন্ত করে দেখব। টাকার উৎস ও সংগঠনের সম্পত্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কেউ বলবেন, দুর্নীীত খুঁজতে ভারতে যেতে হল। তার নামটি আনলাম, তিনি বড় ধর্মীয় নেতা বলে। আবার তিনিই বাংলাদেশে বলেছিলেন, ধর্ম বেচে খাওয়ার চেয়ে পতিতার রোজগার উত্তম। হেফাজতে ইসলামের মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম ও প্রতারণার একাধিক অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির মামলা হয়েছিল। হেফাজতের শীর্ষ বহু নেতার বিরুদ্ধেই রয়েছে দুর্নীতির মামলা।
এতো উদাহরণের পরে অস্বীকার করার সুযোগ থাকে না যে, দুর্নীতির সাথে ধর্মান্ধতার একটা সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের বের করতে হবে সম্পর্কটা কিজন্য তৈরি হয়?
একজন সুশিক্ষিত ও সচেতন মানুষ দুর্নীতিতে জড়াতে চান না মূলত তিনি জানেন দুর্নীতি করলে তার রেকর্ড থাকবেই এবং তা কোন না কোনভাবে প্রকাশিত হবে এবং তাতে একসময় তার অর্জিত সম্মান ধুলায় মিশে যাবে। তারচেয়েও বড় কথা যে, সম্পদ আমার নয়, তা আমি কেন গ্রহণ করবো। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ দিয়ে কি করবো? একজন মানুষ বেশিদিন বাঁচে না। ফলে তার অনেক টাকার দরকার নেই। অসৎ টাকা নিজের কোন কাজে আসে না। সন্তানদের তারা মানুষ করার চেষ্টা করেন। ফলে তাদের জন্যও দুর্নীতির টাকা রেখে যেতে চান না। তারা জানেন সন্তান যদি কখনো জানে যে, পিতা দুর্নীতিবাজ তাহলে, সম্মানের চোখে দেখবে না। তিনি জানেন এমন অপরাধের কোন ক্ষমা হবে না। তাকে কোনভাবেই ধর্ম বা ধর্মীয় গুরুরা রক্ষা করতে পারবে না। ধর্মালয় তৈরি বা ধর্ম বিস্তারে যত টাকাই ব্যয় করি তা তাকে রক্ষা করবে না। তাছাড়া তিনি জানেন এসবের কোন কার্যকারিতা নেই তাই অর্থহীনও। তার মধ্যে তৈরি নৈতিকতা, মানবতাবোধ এবং দূরদৃষ্টি তাকে দুর্নীতিবাজ হতে দেয় না। তাহলে একজন ধর্মান্ধ কেন দুর্নীতি করে?
একজন ধর্মান্ধ মানুষ দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হয় না। সে ভবিষ্যতের পরিণতি দেখতে পায় না। তার মধ্যে নৈতিকতাবোধ ও মানবতাবোধও তৈরি হয় না। সে জানে পাপের মাপ রয়েছে। ফলে সে দুর্নীতিতে জড়িয়ে প্রথমেই ব্যয় করে সেই মাপ পাওয়ার জন্য। এই মাপ পেতে সে আরো গভীরভাবে জড়িয়ে পড়ে ধর্মের সাথে। সে ভেবে নেয় ধর্মালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দোয়া, ধর্মালয়ের ইট-পাথরের দোয়া এবং স্বয়ং স্রষ্টার দোয়া তাকে রক্ষা করবে। সে ভেবেই নেয়, এসব দুর্নীতি কেউ ধরতে পারবে না। যখন কেউ ধরতে আসবে তখন কিছু নগদ-নারায়ণ দিয়ে রক্ষা পেয়ে যাবে। এছাড়া এতো দোয়া-খয়রাত পেয়েছে তাও কাজে লাগবে। তিনি এসেব পথে ব্যয় বাড়িয়ে দেন এবং এজন্য আরো বেশি মাত্রায় দুর্নীীততে জড়িয়ে পড়েন। এ কারণেই সেসকল দেশে ধর্মান্ধ মানুষ বেশি সেসব দেশে দুর্নীতিও বেশি। এটা গণিতের মতোই। অবাক হওয়ার কিছু নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews