লাঠিখেলা গ্রামবাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন খেলা। কালের বিবর্তনে খেলাটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে বগুড়ার সোনাতলা থেকে। এ খেলার পাশাপাশি ঘোড়দৌড় খেলা, পাতা খেলা ও হা-ডু-ডু ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী খেলা আগের মতো এখন আর তেমন দেখা যায় না। এর স্থলে দখল করে নিয়েছে ক্রিকেট,ব্যাডমিন্টন ও ফুটবল খেলা। বর্তমান খেলাগুলোর প্রতি মানুষদের আগ্রহ বেশি। তারপরও বিভিন্ন এলাকার উৎসুক যুবকরা হারিয়ে যাওয়া খেলাগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে লাঠিখেলা। এ খেলায় ঢাক-ঢোল ও বাঁশির প্রয়োজন হয়। এ খেলার শুরুতেই যখন ঢাক-ঢোল আর বাঁশির বাজনা বেজে ওঠে তখন খেলা দেথার জন্য চারদিক থেকে নানা বয়সীর নারী-পুরুষরা ছুটে আসে। এ খেলায় অংশ নেয় ছেলে ও বুড়ো বয়সের লোকেরা। একজোড়া,দুইজোড়া কিংবা তিনজোড়া মানুষ লাঠি নিয়ে বাজনার তালে-তালে খেলতে থাকে। দেখতে খুব মজা পায় দর্শকরা। তা দেখে ছোট ছেলেদের অনেকে বাড়িতে লাঠিখেলা শেখার চর্চা করতো। তারাই পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক লাঠি খেলায় অংশ নিতো। লাঠিখেলা কেমন, এখনো অনেক ছেলে-মেয়েরা জানে না। গত কয়েক বছর ধরে সোনাতলা উপজেলার কলসদহ গ্রামে স্থানীয় যুব সমাজের উদ্যোগে ঘোড়দৌড় খেলার পাশাপাশি লাঠিখেলা হয়ে থাকে।
আয়োজকদের মধ্যে হাজী হান্নান জানান, বর্তমান যুগের ছেলে-মেয়েদেরকে আনন্দ দেয়ার জন্য গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা,পাতাখেলা ও ঘোড়দৌড় খেলার আয়োজন করি। এসব খেলা সব বয়সের লোকদের কাছে প্রিয়। এ সব খেলা আনন্দদায়ক। শান্তি-শৃঙ্খলা পরিবেশে মেলা ও খেলা সম্পন্ন করতে প্রশাসন সহযোগিতা করে থাকে।
সোনাতলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক, সহকারী অধ্যাপক জিয়াউল ইসলাম শান্তু বলেন, বাঙালী সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এই লাঠিখেলা। নব্বয়ের দশক পর্যন্ত সোনাতলায় সকল জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে লাঠি খেলা, পাতা খেলা, হা ডু ডু খেলার আয়োজন করা হতো। কিন্তু এখন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে এসব খেলা হয় না। খেলার আয়োজন না থাকায় খেলোয়ারও তৈরি হচ্ছে না। এর ফলে হারিয়ে যেতে বসে আমাদের এলাকার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো। তিনি জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে এসব খেলা আয়োজনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট