পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার ঢালারচর থেকে প্রতিদিন ভোরবেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ যায় একটা লোকাল ট্রেন। কিছুটা পথ যাওয়ার পর রাজাপুর ও তাতীবন্ধ ষ্টেশনের মাঝামাঝি এসে ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এ ট্রেনে সাধারণত মানুষজন রাজশাহীতে ডাক্তার দেখাতে বা অন্য কোনো কাজে যায়।ভোরবেলা ট্রেন যাত্রা শুরু হয় জন্য যাত্রীরা বাড়িতে নাস্তা না করে সাধারণত পাবনায় গিয়ে নাস্তা না করেন।কিন্তু পাবনা পৌঁছার আগেই সকাল ৮ টা নাগাদ ট্রেন বিকল হয়ে যায়।তখন ট্রেনে পৌনে তিনশোর মতো যাত্রী এবং ৮ জন রেল কর্মী ছিলেন।
এমন জায়গায় ট্রেন বিকল হয় যেখানে কোনরকম খাবার পাওয়া যায় না। দীর্ঘক্ষণ ট্রেন বিকল থাকায় ট্রেনের লোকজন নেমে এসে খাবার খুঁজতে থাকেন। কিন্তু আশেপাশে কোথাও কোনো খাবার না পেয়ে বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা ক্ষুধা তৃষ্ণায় অস্থির হয়ে পড়ে। নাজমা বেগম নামে একজন মহিলার একজন নিকটাত্মীয় মারা যাওয়ায় তিনি সেখানে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি মানুষের এ দূরাবস্থা দেখে চাল ডাল দিয়ে দ্রুত খিচুড়ি রান্না করে নিয়ে এসে কিছু মানুষকে খেতে দেন। তখন গাড়ির স্টাফসহ বয়স্ক ও শিশুরা তা রেললাইনের উপর বসেই খেতে থাকলে তা দেখে অনেকেই তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। সুমি আক্তার একজন ভ্যান চালকের স্ত্রী। তিনিও খিচুড়ি রান্না করে নিয়ে আসেন। এভাবে দাঁড়িয়ে পড়া ট্রেনের আশেপাশের বাড়ির মানুষ ভাত,খিচুড়ি, পানি নিয়ে মানুষকে সেবা করেন।
এভাবে ঘন্টা তিনেক ট্রেন সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা কালে নাজমা বেগমের মতো অনেকেই এগিয়ে আসেন সাহায্যের ডালি হাতে নিয়ে। ঘন্টা তিনেক পরে ইঞ্জিন চালু হলে মানুষের মানবতার দৃষ্টান্ত মাথায় নিয়ে গন্তব্যের পথে চলতে শুরু করে। পত্রিকায় সাধারণত নেতিবাচক খবর বেশি থাকে। এটি একটা ইতিবাচক খবর,যা ১০ ফেব্রুয়ারি প্রথম অনলাইনে প্রকাশিত হয়।ভালো লাগায় তা আজকের এ ভালোবাসা দিবসে সকলের জানার জন্য প্রকাশ করছি।