আজ রবিবার ১৩ এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:০০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে (নারীর মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফরম) গাজায় নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষের উপর হামলা-নির্যাতন বন্ধ করার দাবি জানিয়ে এবং গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে’মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
বক্তব্য রাখেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা. কে. চৌধুরী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম এবং বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি রেখা চৌধুরী। উক্ত কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে আরো বক্তব্য রাখেন আইইডি এর তারিক হোসেন, নিজেরা করি এর সোহানা আহমেদ, এডাব এর সমাপিকা হালদার, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের সেলিনা পারভীন, একশন এইডের মৌসুমি বিশ্বাস এবং ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের এর রুহুল আমিন। সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের মেহেরুননেসা ও উপস্থিত ছিলেন দীপ্ত ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, যেকোনো যুদ্ধের মত গাজায় সংঘটিত যুদ্ধে বেশি সহিংসতার শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু। গাজার সমস্যা হাজার বছরের। সারা বিশ্বের মানবাধিকারকর্মীরা কি এই জেনোসাইডের বিপক্ষে দাড়াবে না- যারা বিশ্বমানবাধিকারের পক্ষে। তিনি এসময় বলেন গাজার যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘের তৎপরতা দেখা যায়না। এই পরিস্থিতিতে তিনি আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে জেনোসাইডের বিচার হতে হবে বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক শক্তি, সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এবং যুদ্ধবাজ শক্তি প্রতিহত করে গাজার যুদ্ধ বন্ধ করে মানবাধিকারকে রক্ষার জন্য সমগ্র বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানান ।
বক্তব্যে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা. কে. চৌধুরী বলেন, গাজার যুদ্ধ বন্ধে তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রসহ সমগ্র বিশ্বকে জেগে উঠতে হবে। দখলদার বাহিনীকে সহায়তা করা পরাশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। আমেরিকা প্রবাসী আমাদের সিলেটের এক ডাক্তার গাজায় কাজ করছিলো সে জানালো যে, সে গাজায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলো কিন্তু একসময় তাঁকে সেখানে কাজ করতে অনুমতি দেয়নি আমেরিকান সরকার তারা পছন্দ করছিলো না। গাজায় এতটা অমানবিক অবস্থা যে সেখানে যখন সে চিকিৎসা দিয়েছে তখন বাঙ্কারে এনেসথেসিয়া ছাড়া শিশুদের সার্জারী করতে হয়েছে যেটা সারারাত তাকে ঘুমাতে দেয়নি। আমরা ২০২৩ সালের নভেম্বরেও শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেছি তখন তেমন কেউ আসেননি। যাই হোক গতকাল যাঁরা এতবড় একটি জমায়েত করেছেন তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানাই কৃতজ্ঞতা জানাই।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, চলমান গণহত্যার মুখে সারাবিশ্বের নীরবতা দেখে বিশেষত পাশ্চাত্য দেশের নীরব ভূমিকা দেখে আমরা বিস্মিত। যারা মানবাধিকার রক্ষায় আমাদের বড় বড় প্রতিশুতির কথা শোনান আজ তাদের ও কোনো কার্যকর ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না গাজার যুদ্ধ বন্ধে। এই যুদ্ধে নিহতদের ৭০% নারী ও শিশু। মানবাধিকার বোধ থাকলে এই হত্যাযজ্ঞ সহ্য করা সম্ভব নয়। তিনি অবিলম্বে এই গণহত্যা বন্ধের জন্য সমগ্র বিশ্বকে রুখে দাড়ানোর আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি রেখা চৌধুরী বলেন গাজার এই সংঘাতময় পরিস্থিতিতে আজ বিশ্ব বিবেক কোথায়? তিনি এসময় বলেন ক্ষমতার প্রভাবে এভাবে হত্যাযজ্ঞ চলতে পারেনা। তিনি মানবতা রক্ষায় অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান।
উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচিতে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সংগঠনের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক এবং কর্মকর্তাসহ শতাধিকজন উপস্থিত ছিলেন। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের অ্যাডভোকেসি ও নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামী।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট