কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না সীমান্ত হত্যা। চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে এক বছরে রংপুর বিভাগে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ বাংলাদেশি নাগরিক। আহতও হয়েছেন শতাধিক। এরপরও থামছে না অবৈধ পারাপার।ফলে ঝরছে একের পর এক প্রাণ। বিজিবির তথ্য মতে, চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে গত ১ বছরে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে শতাধিক। এতে নিরাপত্তা হীনতায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সীমান্তে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, সম্প্রতি সীমান্তে পাথর উত্তোলন বন্ধে বিজিবি কড়া নজরদারি শুরু করে। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন হাজারো পাথর শ্রমিক। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লুকিয়ে পাথর তুলতে গেলে বিজিবি ও বিএসএফর তোপের মুখে পড়তে হয় তাদের।
শ্রমিকরা বলছেন, পাথর উত্তোলন ছাড়া অন্য কোনো কাজ করে পরিবার চালানোর সুযোগ কম।ফলে বাধ্য হয়ে তারা অনেকেই যুক্ত হয়েছেন গরু চোরাচালানে। ভারতে প্রবেশ করে গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে হতাহত হচ্ছেন তারা।
সূত্র জানায়, পঞ্চগড় সদর আটোয়ারী, তেঁতুলিয়া ও বোদা উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান হচ্ছে ভারতীয় গরু। একটি শক্ত সিন্ডিকেটে এসব গরু বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভুয়া পারমিট তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য তোলা হচ্ছে এসব ভারতীয় গরু।বিজিবি জানায়, মহানন্দা নদীর উভয় অংশে গভীর খননের মাধ্যমে পাথর উত্তোলন করায় ভাঙনের মুখে পড়েছে নদীর তীর। এতে করে নদীর গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে সীমান্ত পিলার। ইতোমধ্যে সমগ্র সীমান্তে ১৯২টি পিলার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে ভূখণ্ড সংরক্ষণ করতে নানা বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সূত্র জানায়, পঞ্চগড় সীমান্তের কিছু কিছু জায়গায় কাঁটা তারের বেড়া না থাকায় একটি সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি দল দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ভারত থেকে গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত হচ্ছে। এসব ঘটনায় সীমান্তে বসবাসকারী সাধারণ মানুষের মধ্যে বাড়ছে উৎকণ্ঠা। এ ক্ষেত্রে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি উঠেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষের। জেলা সদরের নিকটবর্তী সীমান্ত হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাঘরা মোমিনপাড়া এলাকায় প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকায় নেই কাঁটা তারের বেড়া। একটি সংঘবদ্ধ চোরাকারবারি দল এই পথ ব্যবহার করছে গরু চোরাচালানে। সম্প্রতি গরু আনতে গিয়ে বিএসএফএর গুলিতে নিহত হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। অরক্ষিত এই সীমানায় প্রতিনিয়তই গরু ঢুকছে। এলাকার মানুষ এ বিষয়ে স্থানীয় বিজিবির কাছে অভিযোগ করলেও কার্যত কোনো ফল পাচ্ছেন না তারা। এদিকে সীমান্ত হত্যা বন্ধে জনগণকে সচেতন করার নানা উদ্যোগের কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসক মো. সাবেদ আলী বলেন, আমাদের বিজিবি ও পুলিশ ফোর্সের যৌথ একটা অপারেশন শুরু করতে যাচ্ছি। যারা এ ধরনের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে, তাদের তালিকা সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট