মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও কূটনীতিক এম খায়রুজ্জামানকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন মালয়েশিয়ার হাইকোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার আদালত নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আগামী ২০ মে।
এর আগে গত শুক্রবার মালয়েশিয়ার একটি আদালত খায়রুজ্জামানের বিষয়ে শুনানির আগে তাঁকে হস্তান্তর না করার জন্য বলেন সে দেশের সরকারকে।
গতকাল ওই দেশের উচ্চ আদালতে খায়রুজ্জামানের আইনজীবীরা তাঁকে হস্তান্তর ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবি করেন এবং বাংলাদেশে পাঠানোর উদ্যোগের ওপর নিষেধাজ্ঞা চান।
ফ্রি মালয়েশিয়া টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খায়রুজ্জামানকে যেন বাংলাদেশে না পাঠায় সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছেন। খায়রুজ্জামানের ‘হেবিয়াস কর্পাস’ আবেদনের পর বিচারক এম জাইনি মাজলান এ আদেশ দেন। রায়ে বিচারক বলেন, ‘আমি যে আদেশ দিয়েছি তা উপেক্ষা করে তাঁকে (খায়রুজ্জামান) বিতাড়িত করা হয়েছে, এটি আমি শুনতে চাই না। ’
অনুমোদিত সময়ের চেয়ে বাড়তি সময় মালয়েশিয়ায় অবস্থানের অভিযোগে পুলিশ গত বুধবার কুয়ালালামপুরের আমপাঙ এলাকা থেকে খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে। খায়রুজ্জামান জেলহত্যা মামলার আসামি ছিলেন। বিএনপি সরকারের সময় দেওয়া মামলার রায়ে তিনি খালাস পান। তখন তিনি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার ছিলেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে দেশে তলব করলেও তিনি ফেরেননি। এর প্রায় ১৩ বছর পর খায়রুজ্জামান মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার হন।
খায়রুজ্জামানের পরিবার ও আইনজীবীদের দাবি, তিনি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের কার্ডধারী শরণার্থী। তাঁকে অন্যায়ভাবে মালয়েশিয়া সরকার গ্রেপ্তার করেছে। বাংলাদেশে ফেরত পাঠালে তাঁর জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজাহ গত বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুরে সাংবাদিকদের বলেছেন, আইন অনুযায়ীই খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশের একটি ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততায় সে দেশের সরকারের অনুরোধে খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, অভিবাসন আইন ভাঙার দায়ে খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের পরপরই মালয়েশিয়া সরকার কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে জানিয়েছে। বিদেশে অবৈধভাবে অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের যে প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনা হয়, খায়রুজ্জামানকেও সেখানে ফিরিয়ে আনবে বাংলাদেশ।
মালয়েশিয়ার আদালতের গতকালের সিদ্ধান্তের পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, খায়রুজ্জামানের পরিবার যে টাকা খরচ করেছে তাতে তারা আংশিক সাফল্য তো পাবেই। সে ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার সরকারই এটি মোকাবেলা করবে।
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট