1. fauzursabit135@gmail.com : Fauzur Rahman Sabit : Fauzur Rahman Sabit
  2. sizulislam7@gmail.com : sizul islam : sizul islam
  3. mridha841@gmail.com : Sohel Khan : Sohel Khan
  4. multicare.net@gmail.com : অদেখা বিশ্ব :
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৬ অপরাহ্ন

ডেঙ্গু জ্বরের বিভীষিকাময় ৭ দিন

ডা.মোজাহিদুল হক
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৫ আগস্ট, ২০২৩
ডা. মোজাহিদুল হক
ডেঙ্গুতে জ্বর শুরু হবার দিন কে দিন-১ হিসাব করা হয়।
প্রথম দিন থেকে জ্বর কেবল বাড়তেই থাকবে, ৪ র্থ দিন পর্যন্ত জ্বর শুধু বাড়তেই থাকবে। সাথে মাথা ব্যাথা, চোখের পিছনে ব্যাথা, প্রচন্ড বমি বমি ভাব, আর বমি হওয়া, খাবার রুচি একবারি কমে যায়।।
৪র্থ দিন এ >৯০% পেশেন্ট এর জ্বর ভালো হয়ে যায়,
৪র্থ দিন শেষ হলেই শুরু হয় ঝুঁকিপূর্ণ সময় :
জ্বর শুরু হবার পর থেকে নিয়ে ৫ম ও ৬ষ্ট এ দুই দিন ডেংগু রোগীর জন্য কিছুটা ঝুকিপূর্ণ দিন। এই দুই দিন রক্তের অণুচক্রিকা তথা প্ল্যাটিলেট কাউন্ট পর্যায়াক্রমে কমে যায়,
সাধারণত নরমাল প্ল্যাটিলেট কাউন্ট থাকে
১.৫০.০০০ থেকে ৪ লাখ /Cmm
৫ম দিন প্ল্যাটিলেট কাউন্ট দেড় লাখের নিছে চলে যাবে,
৬ষ্ট দিন ৫ম দিনের চেয়েও কমে যাবে।
৭ম দিন সকালে আরো কমে যাবে।
ফলশ্রুতিতে শরীরের অভ্যন্তরীণ ব্লিডিং হতে পারে,
আবার কারো কারো ক্ষেত্রে ব্লাড ভেসেল থেকে প্লাজমা লিক হয়ে পেশেন্ট শকে চলে যেতে পারে।
সপ্তম দিন শেষে ৯০% পেশেন্ট এর প্ল্যাটিলেট কাউন্ট বেড়ে যাবে। আর প্ল্যাটিলেট কাউন্ট একবার যদি বাড়তে থাকে, তাহলে এইটা বাড়তেই থাকবে। আর কমবেনা,
ডেঙ্গুতে তে প্ল্যাটিলেট কাউন্ট কম দেখে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই, ৬ষ্ঠ দিন কিংবা ৭ম দিন সকালে যদি প্ল্যাটিলেট কাউন্ট ১০ হাজার ও হয়ে যায়, তাহলেও ভয়ের কোনো কারণ নাই, যদি শরীরের অভ্যন্তরীণ কোনো ব্লিডিং না থাকে….
ব্লিডিং কয়েক ভাবে বুঝা যেতে পারে.
১. বমি বা কাশির সাথে রক্ত যাওয়া
2..নাক দিয়ে রক্ত যাওয়া
3. প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া
4. শরীরে চামড়ার নিছে রক্ত জমে যাওয়া, ফলশ্রুতিতে লাল লাল র্যাশ দেখা দিতে পারে
5. কালো রঙ এর পায়খানা হওয়া।
ডেংগু তে প্ল্যাটিলেট কাউন্ট কমে গিয়ে এমন জটিলতা শতকরা ২-১ জন এর হতে পারে
তাহলে ৭ম দিন সকালে CBC রিপোর্টে প্ল্যাটিলেট কাউন কম দেখে ব্লাড ট্রান্সফিউশন করা এতটা গুরুত্ব বহন করেনা।
কারণ সপ্তম দিন সকালে যদিও প্ল্যাটিলেট কম থাকে, তথাপি ৭ম দিন সন্ধ্যায় কিংবা ৮ম দিন সকালে যদি আবার CBC পরীক্ষা করা হয়, তাহলে প্ল্যাটিলেট কাউন্ট বাড়বে।
তাই ভাইটাল সাইন তথা ব্লাড প্রেশার, পালস, ইত্যাদি যদি স্বাভাবিক থাকে, তাহলে শুধু প্ল্যাটিলেট কাউন্ট কম দেখে ব্লাড ট্রান্সফিউশনের জন্য দৌড়াদৌড়ি করার কোনো দরকার নাই, যতক্ষণ পর্যন্ত ব্লিডিং না হয়, ততক্ষণ ভয় পাওয়ার কোনো দরকার নাই, শুধু পেশেন্ট কে CBC রিপিট করতে বললেই হবে। তবে প্ল্যাটিলেট কাউন্ট ১০ হাজার থেকে কমে গেলে কিছু রিসার্চে প্ল্যাটিলেট ট্রান্সফিউশন অথবা ব্লাড ট্রান্সফিউশন এর কথা বলেছেন ঝুকি এড়ানোর জন্য।
ডেঙ্গু জ্বরে Day 5- day 6 এ ব্লাড ভেসেল থেকে প্লাজমা লিক হয়ে কিংবা কেউ যদি শিরাপথে বেশি বেশি ফ্লুইড দিতে থাকে, তাহলে ফ্লুইড ওভার লোড হয়ে অ্যাসাইটিস হয়ে যেতে পারে, তখন পেশেন্ট বলবে যে, তার পেট ব্যাথা করে।
অ্যাসাইটিস হচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্য আল্টাসনোগ্রাম করা যেতে পারে।
আবার কারো ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফ্লুইড কিংবা লিকেজ হওয়া প্লাজমা প্লুরাল স্পেসে গিয়ে plueral effusion হতে পারে, পেশেন্ট বলবে, বুক চাপচাপ লাগে, কিংবা বুক ব্যাথা সাথে কাশিও হতে পারে।
এই ক্ষেত্রেও ভয়ের কোনো দরকার নাই যদি হেমাটোক্রিট আর ব্লাড প্রেশার নরমাল থাকে। কারণ ৭ম দিন শেষ পেশেন্ট রিকভারি স্টেজে চলে যাবে।
নোট- ডেংগুতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে BP maintain করা, আর ফ্লুইড ইনটেক আর আউটপুট চেক করা।পেশেন্ট যেনো শকে না যায়, সেই দিকে খেয়াল করা।
আর একটা কথা মনে রাখা চাই, ডেঙ্গু জ্বরে শরীর একবারি দূর্বল থাকে, জ্বর ভালো হয়ে যাবার পরেও ২১ দিন পর্যন্ত শরীর অত্যান্ত দূর্বল থাকে। এই সময় প্রচুর তরল খাবার,
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, দুধ ডিম, মাছ ও ফলমূল বেশি বেশি খাওয়া দরকার। সাথে প্রতিদিন ২-৩ প্যাকেট করে ওরস্যালাইন খাবে।এতে করে দূর্বলতা কাটবে।
আসুন, ডেংগুতে আতংকিত না হই,
সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট

Theme Customized BY LatestNews